আনোয়ার রোজেন, চট্টগ্রাম ব্যুরো
খেলা দেখতে দেখতেই সারতে হবে খাওয়ার কাজ। তাই রেস্টুরেন্টের ভেতরে বসানো হয়েছে জায়ান্ট স্ক্রিন। ক্রিকেটের আবহ তুলে ধরতে পতাকা থাকবে প্রতিটি টেবিলে। তাই বিশেষভাবে তৈরি করা হচ্ছে টি২০ বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া প্রতিটি দলের পতাকা। বাংলাদেশের শুভকামনা জানাতে রেস্টুরেন্টে থাকবে শুভেচ্ছা বইও। বিশ্বকাপকে ঘিরে চট্টগ্রামের রেস্তোরাঁগুলোর এমন পরিবর্তন বহিরাঙ্গে। পরিবর্তন এনেছে তারা খাবারের মেন্যুতেও। তাই তো বিশ্বকাপ সামনে রেখে চট্টগ্রামে থাকবে রিভার্স সুইং ফিশ, গুড লেংথ বল স্যুপ, গুগলি প্রন, ফুলটস চিকেন ও বাউন্সার মাটন। আবার ফুলটস চিকেনকে ভিন্ন আমেজ দিতে রাখা হয়েছে বোল্ড আউট ডাল! বিশ্বকাপ সামনে রেখে খাবারের মেন্যুতে এমন বৈচিত্র্য এনেছে হোটেল এমব্রোশিয়া। তাদের সঙ্গী হয়েছে চট্টগ্রামের নামকরা হোটেল-রেস্তোরাঁ বোনানজা, পেনিনসুলা, ওয়েল পার্ক, রোদেলা বিকেল, অর্কিডসহ এক ডজন রেস্তোরাঁ।
হোটেল এমব্রোশিয়ার জেনারেল ম্যানেজার বিজয় ফ্রান্সিস কস্তা বলেন, ‘টি২০ বিশ্বকাপের আমেজ আনতেই খাবারের এমন নামকরণ। শুধু নামে নয়, এসব খাবারের স্বাদ ও মানেও আনা হয়েছে কিছুটা বৈচিত্র্য।’ শুধু এমব্রোশিয়াই নয়, বিশ্বকাপ উপলক্ষে ১৬ থেকে ৩১ মার্চ চট্টগ্রামের সব ক’টি তারকা রেস্টুরেন্টই পরিবেশন করবে বৈচিত্র্যপূর্ণ রসনা।
বিদেশিদের সালাদে তুষ্ট করতে প্রস্তুত বোনানজা :বিদেশি পর্যটকরা খাবারের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পছন্দ করেন সালাদ। তাই বিশ্বকাপ উপলক্ষে চট্টগ্রামে আসা বিদেশিদের আকৃষ্ট করতে বোনানজায় থাকছে ছয় রকমের সালাদ। এগুলো
হলো_ শিম ককটেল সালাদ, তুনা ফিশ সালাদ, অ্যারাবিয়ান সালাদ, ওয়েস্টার্ন সালাদ, হাওয়াই ও রাশান সালাদ। বোনানজার ব্যবস্থাপক মো. নাসির উদ্দিন বলেন, ‘সালাদের অন্য রকম কদর রয়েছে বিদেশিদের কাছে। তাই আমরা ভিন্ন স্বাদের সালাদের আয়োজন রাখছি। পাশাপাশি থাকছে ওয়েস্টার্ন ও কন্টিনেন্টাল খাবার।’ রসনা তৃপ্তির জন্য এই রেস্টুরেন্টে থাকছে চিকেন, টমেটো, ভেজিটেবল ও মাশরুমের ক্রিম স্যুপ। এ ছাড়া মাছের তৈরি বিশেষ আয়োজনের মধ্যে আছে বোনলেস গ্রিল ফিশ, স্টিম হোল ফিশ, আলাকিং ফিশ। বিদেশি খাবারের পাশাপাশি দেশীয় ঐতিহ্যবাহী খাবারের আয়োজনও থাকবে বলে জানান হোটেলের ব্যবস্থাপক।
রোদেলা বিকেলে খেতে খেতেই পাওয়া যাবে খেলার আমেজ
টি২০ বিশ্বকাপের প্রথম পর্বের প্রস্তুতি ম্যাচ ছাড়াও এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপ চলাকালীন অনুশীলন করবে চট্টগ্রামে আসা বিভিন্ন দল। স্টেডিয়ামের পাশেই ভোজনরসিকদের জন্য রয়েছে রোদেলা বিকেল। বিশ্বকাপের উত্তেজনার আঁচ লেগেছে এ রেস্টুরেন্টের উনুনেও। রোদেলা বিকেলের পরিচালক মাহবুবুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘টি২০ বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচ ও অনুশীলন দেখতে আসা দর্শকের কথা মাথায় রেখে ইন্ডিয়ান ও কাবাবজাতীয় খাবার পরিবেশনের পরিকল্পনা রয়েছে। পাশাপাশি ঐতিহ্যবাহী দেশীয় খাবারের পদও রেখেছি আমরা।’ স্টেডিয়ামসংলগ্ন এ রেস্টুরেন্টে খাবারের পাশাপাশি পাওয়া যাবে খেলার আমেজও। কারণ, এমএ আজিজ স্টেডিয়ামের গ্যালারির সঙ্গে একেবারে লাগোয়া হওয়ায় মাঠের উত্তেজনা আছড়ে পড়বে এ রেস্টুরেন্টে। গ্রাহকদের খেলার আমেজ সরাসরি উপভোগের সুযোগ তৈরি করতে এখানে থাকবে বড় পর্দায় খেলা দেখার ব্যবস্থাও।
প্রস্তুত হোটেল ওয়েল পার্ক, অর্কিড বিজনেস, সেন্ট মার্টিনও
বিশ্বকাপ চলাকালীন প্রতিদিন থাকছে বুফে লাঞ্চের আয়োজন। আর প্রতিদিনই বুফেতে ভিন্ন ভিন্ন খাবারের পদ যুক্ত করার পরিকল্পনার কথা জানালেন ওয়েল পার্ক হোটেলের রেস্টুরেন্ট শাখার কর্মকর্তা শফিউল আজম। তিনি বলেন, ‘বিদেশি পর্যটককে সন্তুষ্ট করতে খাবারের মেন্যু ঠিক করা হয়েছে। বিদেশি খাবারের পাশাপাশি স্থানীয় খাবারগুলো আকর্ষণীয়ভাবে পরিবেশন করার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের।’ খাবার নিয়ে একই রকম প্রস্তুতির কথা জানালেন হোটেল অর্কিড বিজনেসের কর্মকর্তা মো. আশফাক ও হোটেল সেন্ট মার্টিনের ম্যানেজার (ফুড অ্যান্ড বেভারেজ) মজিবুল হক।
Originally Published in The Daily Samakal