সঞ্জয় বাবু
বাহারি ইফতারি, বাহারি স্বাদরয়েলের গুজরাটি ডোকলা, রোদেলা বিকেলের জালি কাবাব ও জাফরান জিলাপি, পেনিনসুলার চকলেট চিকেন, হান্ডির হালুয়া-লাড্ডু, পিটস্টপের প্রনরোল, হাইওয়ের বিরিয়ানি-হালিম, আগ্রাবাদের এরাবিয়ান মেন্যু
নগরীর হোটেল-রেস্টুরেন্টগুলোতে চলছে ইফতারি উৎসব। প্রতিবছরের মতো এবারও রয়েছে বিশেষ আয়োজন। হালিম, বিরিয়ানি, চপ, জিলাপি, কাবাব, হালুয়া, রোল, লাড্ডুসহ নানান বাহারি খাবারে সেজেছে প্রায় সব রেস্টুরেন্ট।
এনায়েত বাজারের রয়েল বাংলা সুইটসে ২২ আইটেমের সাথে স্পেশাল হিসেবে আছে গুজরাটি খাবার কামেন ডোকলা, রেডি সেমাই ও জিলাপি। এম এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন রোদেলা বিকেলে জালি কাবাব, জাফরান জিলাপিসহ ২৫ ধরনের স্বাস্থ্যসম্মত খাবার নজর কেড়েছে সবার। সাথে রয়েছে নানান পদের দেশি-বিদেশি বিরিয়ানি আর খাসি-মুরগি-গরুর মাংস। জিইসি মোড়ের দ্য পেনিনসুলা চিটাগংয়ে রয়েছে দেশি-বিদেশি জনপ্রিয় অনেক খাবার। বারবিকিউ থেকে শুরু করে চকলেট চিকেনসহ ২৮টি স্পেশাল আইটেম। পুলিশ লাইন সংলগ্ন হান্ডিতে ইন্ডিয়ান-বাংলাসহ ৩৫ আইটেম। আরো আছে বাহারি স্বাদের হালুয়া-লাড্ডু, স্পেশাল দই আর হায়দ্রাবাদি বিরিয়ানিসহ স্পেশাল হালিম। লালখান বাজার মোড়ের হাইওয়ে সুইটসে নানারকম মিষ্টির সাথে মুরগি-খাসির হালিম, বিরিয়ানি আর সবার পছন্দের দইবড়া। পিটস্টপে স্পেশাল প্রনরোল, পিঠা ও জুসসহ ৪০টি আইটেম। এরাবিয়ান খাবারে ভরপুর হোটেল আগ্রাবাদে আছে নতুন স্পেশাল হালিম, লাচ্ছি ও শরবত। জিইসি মোড়ের হান্ডি-ইন্ডিয়ান বিস্ট্রো রেস্টুরেন্টে গোমুখা হালিমসহ রান-ই-সিকানদারি ও ভারতীয়-বাংলার সুস্বাদু ৫০টি আইটেম।
রয়েল বাংলা সুইটসে রমজানজুড়ে প্রতিদিন দুপুর থেকেই লম্বা লাইন পড়ে যায়। অনেকে ফিরে যান খালি হাতেও। স্বত্বাধিকারী হিরানী খোজেমা মইজ বলেন, ‘সবাইকে চাহিদা অনুযায়ী ইফতারি সরবরাহের চেষ্টা থাকে আমাদের। তবে অনেক সময় চাহিদা বেশি থাকায় তা সম্ভব হয় না।’ এবারের স্পেশাল আইটেম সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘১১ ধরনের চাল-ডাল-মসলা দিয়ে তৈরি গুজরাটি কামেন ডোকলা এবার বেশ উপভোগ করছেন সবাই। এছাড়া রেডি সেমাইসহ ইফতারির ২২টি স্পেশাল আইটেম রয়েছে।’
স্টেডিয়াম পাড়ায় সমপ্রতি যাত্রা শুরু করা দৃষ্টিনন্দন রেস্টুরেন্ট রোদেলা বিকেল বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠেছে ভোজনরসিকদের কাছে। প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত ভিড় লেগে থাকে এখানে। বিশুদ্ধ সানফ্লাওয়ার অয়েল, দুবাইয়ের গুঁড়ো দুধ, ঘি আর স্পেনের জাফরানে দেশি-বিদেশি বাবুর্চিরা তৈরি করেন সব খাবার। এসব খাবার বেশ সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যসম্মত উল্লেখ করে রেস্টুরেন্টটির ম্যানেজার সাইনুল সাবের বলেন, ‘আমাদের ইফতারির সব আইটেম বেশ পছন্দ করছেন সবাই। বিশেষ করে দেশি-বিদেশি নানান খাবার, স্পেশাল মাটন ও দেশি মুরগির হালিম, মেজবানি গরুর মাংস, জালি কাবাব, জাফরান জিলাপিসহ ২৫ ধরনের খাবারের প্রায় সব কটি চেখে দেখছেন ভোজনরসিকরা।’
দ্য পেনিনসুলা চিটাগংয়ের সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং ম্যানেজার জেসন সেলগেডো বলেন, ‘চকলেট চিকেন, চিকেন ললিপপ, শ্রীলঙ্কান রোল, বারবিকিউসহ ২৮টি স্পেশাল আইটেম আছে আমাদের।’
হান্ডির ম্যানেজিং পার্টনার মো. ইমতিয়াজ উদ্দিন নওশাদ বলেন, ‘ইন্ডিয়ান-বাংলাসহ ইফতারির ৩৫টি আইটেম, হায়দ্রাবাদি বিরিয়ানির সাথে বিফ ও মাটন চাপ, হালিম, নতুন বাহারি স্বাদের হালুয়া-লাড্ডু, স্পেশাল দই ভীষণ পছন্দ ভোজনরসিকদের। বিক্রিও বেশ ভালো হচ্ছে।’
মিষ্টির জন্য পুরো চট্টগ্রামে হাইওয়ে সুইটসের সুনাম থাকলেও সেখানকার হালিম, বিরিয়ানি ও দইবড়ার ভক্তও বাড়ছে উল্লেখ করে স্বত্বাধিকারী আনোয়ারুল কিবরিয়া বলেন, ‘ইফতারির নানান আইটেমের পাশাপাশি মুরগি ও খাসির হালিম, মাটন বিরিয়ানি, দইবড়া প্রচুর বানাতে হয়। দুপুরে বিক্রি শুরুর ঘণ্টা খানেকের মধ্যেই ফুরিয়ে যায় সব।’
করপোরেট গ্রাহকদের কাছে পিটস্টপের খাবার বেশ পছন্দ উল্লেখ করে প্রতিষ্ঠানটির ফুড অ্যান্ড বেভারেজ ম্যানেজার মোহাম্মদ গোলাম রব্বানি বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব বাগানের তাজা আমের জুসসহ ইফতারির প্রায় ৪০টি আইটেম রাখা হয়েছে এবার। নানান ধরনের পিঠা, প্রনরোল, চিকেন সাসলিক, পাটিসাপটা, ফালুদাসহ স্পেশাল অনেক আইটেম আছে পিটস্টপে।’
সুলভমূল্যে ইফতারি করা যায় আগ্রাবাদ হোটেলের রেস্টুরেন্টগুলোতে। হোটেলের সিনিয়র ম্যানেজার (সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং) শাহীন মোহাম্মদ নওশাদ বলেন, ‘রিজনেবল প্রাইসে এ বছর ৪০টি আইটেমসহ ব্যুফে মেন্যুতে আছে স্পেশাল হালিম, লাচ্ছি, শরবত এবং এরাবিয়ান মেন্যু।’
Originally Published in The Daily Kaler Kantho