মো: মহিউদ্দিন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
চট্টগ্রাম: দেশিয় খাঁটি উপাদান দিয়েই যেখানে ইফতারি তৈরি করতে পারছে না চট্টগ্রামের নাম করা হোটেল রেস্টুরেন্টগুলো সেখানে বিদেশি সানফ্লাওয়ার অয়েল, দুবাইয়ের নিডো গুঁড়ো দুধ, স্পেনের জাফরান, অস্ট্রেলিয়ার চিনি, খাঁটি ঘি, ভারতের বিশিষ্ট কোহিনূর ব্রান্ডের বাসমতি চালের মতো বাজারের সেরা উপাদানে ইফতারি তৈরি হচ্ছে রোদেলা বিকেলে।
রেস্টুরেন্টটি চালু হওয়ার মাত্র ছয় মাসের মধ্যে প্রথম রমজানে স্বাস্থ্য সম্মত ও পরিচ্ছন্ন ইফতারি তৈরিতে এরই মধ্যে সুনাম কুড়িয়েছে। খাবারের গুণগত মান উন্নত হওয়াতে অনেক ক্রেতাই এখন নিয়মিত ইফতারি কিনছেন রোদেলা বিকেল থেকে।
নগরীর কাজির দেউরির এম এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন ভিআইপি এলাকায় রোদেলা বিকেলের অবস্থানের কারণে এলাকাটি যানজট মুক্ত। ফলে ক্রেতারা এখানে নিরিবিলি ভাবে ইফতারি কিনতে পারছেন।
হোটেল কর্তৃপক্ষ বলছেন, ভেজাল আর অতি মুনাফার বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতা করেও খাবারের মান ঠিক রাখছেন তারা। খাবারের কোয়ালিটিকেই প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে।
পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা, উন্নত খাবার এবং নির্ভেজালের জন্য এরই মধ্যে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ভ্রাম্যামাণ আদালতের প্রশংসা কুড়িয়েছে রোদেলা বিকেল।
স্বাস্থ্য সম্মত ও পরিচ্ছন্ন খাবার তৈরি করায় নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে বেশ সাড়া পাচ্ছেন বলে জানালেন রেস্টুরেন্টের ব্যবস্থাপক(ক্যাশ) মাহবুবুল আলম।
তিনি বলেন,‘আমরা এবার প্রথমবার হলেও সেরা উপাদান, স্বাস্থ্য সম্মত ও পরিচ্ছন্ন ইফতারি তৈরির কারণে ক্রেতাদের বেশ সাড়া পাচ্ছি। একবার যারা ইফতারি কিনছেন তারা পুন:রায় আসছেন।’
তার কথার সত্যতা পাওয়া গেলো দুইজন ক্রেতার সঙ্গে কথা বলে। নগরীর ঈদগাঁ এলাকা থেকে রোদেলা বিকেলের স্পেশাল হালিম কিনতে এসেছেন মাহমুদ নামের এক লোক।
তিনি বাংলানিউজকে বলেন,‘এর আগে এখান থেকে আরেকবার হালিম নিয়েছি। পরিবারের সবাই অন্যান্য রেস্টুরেন্টের চেয়ে রোদেলা বিকেলের হালিম পছন্দ করেছে তাই আবারো নিয়ে যাচ্ছি।‘
নগরীর নামকরা হোটেল রেস্টুরেন্ট থেকে রোদেলা বিকেলের তৈরি ইফতারি অনেক মজাদার এবং সুস্বাদু বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
নগরীর বালুছড়া এলাকা থেকে রোদেলা বিকেলের ইফতারি কিনতে এসেছেন খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ী মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ।
তিনি বাংলানিউজকে বলেন,‘রোজার প্রথম দিন রোদেলা বিকেল থেকে ইফতারি কিনেছিলাম। এরপর দুইদিন আলাদা দুটি রেস্টুরেন্ট থেকে কিনেছি। কিন্তু রোদেলা বিকেলের ইফতারিই সেরা। তাই এখন নিয়মিত এখান থেকে ইফতারি নিচ্ছি।’
রোদেলা বিকেলের জিলাপির আলাদা বৈশিষ্ট্য রয়েছে বলে জানান তিনি।
চট্টগ্রামে নতুন ধারণা:
রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার মাহবুবুল আলম বলেন, বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে খাঁটি জিনিস ব্যবহার করা হয় বললেও ভেজাল থাকেই। বিভিন্ন সময়ে তার প্রমাণও পেয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। কিন্তু স্বাদে, গুনে মাণে চট্টগ্রামে রোদেলা বিকেলই প্রথম যেখানে খাবারে একেবারে খাঁটি জিনিস ব্যবহার হচ্ছে।
তিনি বলেন,‘ বিদেশি সানফ্লাওয়ার অয়েল, দুবাইয়ের নিডো গুঁড়ো দুধ, স্পেনের জাফরান, অস্ট্রেলিয়ার চিনি, খাঁটি ঘি, ভারতের বিশিষ্ট কোহিনূর ব্রান্ডের বাসমতি চাল এখানকার খাবার তৈরিতে ব্যবহার করা হচ্ছে। চট্টগ্রামে এটি নতুন ধারণা।
এসব পণ্য দিয়ে ভারত ও বাংলাদেশের সেরা বাবুর্চিরা ইফতার তৈরি করছেন।
মজাদার ২৫ আইটেম:
দেশি মুরগি দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে চিকেন হালিম, প্রকৃত খাসি দিয়ে মার্টন হালিম, চট্টগ্রামের ঐহিত্যবাহী মেজবানির মাংস, ফিরনি, পাটি সাপটা, স্পেশাল দই, চিকেন বিরানি, বিফ আখনি, জালি কাবাব, চিকেন বিফ রোলসহ ২৫ প্রকারের আইটেম পাওয়া যাচ্ছে।
এছাড়া রোদেলা বিকেলের ‘ওবামা জুসের’ নাম এরই মধ্যে মানুষের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়েছে। রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার মাহবুবুল আলম বলেন, প্রতিষ্ঠানের উদ্দ্যেশ্য যেহেতু ভেজাল ও অতিমুনাফার বিরুদ্ধে যুদ্ধ তাই সব আইটেমের দাম ক্রেতাদের নাগালে রাখা হয়েছে।
অগ্রিম বুকিং:
পারিবারিক অনুষ্ঠান, জন্মদিনসহ যে কোন অনুষ্ঠান আয়োজনেরও ব্যবস্থা রয়েছে রোদেলা বিকেলে। রেস্টুরেন্টের মোট তিনটি ফ্লোর রয়েছে। এরমধ্যে দুটিই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। এছাড়া খোলা বারান্দায় করা হয়েছে অসাধারণ ডেকোরেশন।
স্বচ্ছ কাঁচের ছাদ হওয়াতে রেস্টুরেন্টে বসেই খোলা আকাশ দেখার অসাধারণ সুযোগ। বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য বেশ সাড়া পাওয়া যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন মাহবুবুল আলম।
তিনি জানান, যে কোন অনুষ্ঠান এবং খাবারের অগ্রিম অর্ডার নেওয়া হয়। ০১৬১৬ ৪৪৪৪৬৬ নাম্বারে যোগাযোগ করে সহজেই বুকিং দেওয়ার অপূর্ব সুযোগ রয়েছে।
Originally Published in BanglaNews24