আবদুল্লাহ আল মামুন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

banglanews1চট্টগ্রাম: রোদেলা বিকেল। ভাবছেন কোনো উপন্যাস বা কবিতার কথা বলছি। না এটি একটি খাবারের দোকান। অবাক হওয়ার কিছু নেই। নগরীর এম এ আজিজ স্টেডিয়াম পাড়ায় এর অবস্থান।

নাম যতটা না আপনাকে অবাক করবে তার চেয়ে রেঁস্তোরাটির বৈচিত্রময় খাবার পরিবেশনা আপনাকে আরো বেশি মুগ্ধ করবে।

কাঁচের স্বচ্ছ ছাদে দিগন্ত বিস্তৃত খোলা আকাশ। পাশে সবুজে মোড়ানো মাঠ। টেবিলে জিহ্বা পোড়ার মতো গরম খাবার। খেতে খেতেই জমে উঠবে রোদেলা বিকেলের আড্ডা। পাশেই সড়কে গাড়ির শব্দ, রিকশার টুংটাং আর পথচলতি মানুষের কোলাহল। কিন্তু তবুও মনে হবে এসব থেকে অনেক দুরে আপনি। এমন পরিবেশে আড্ডার পাশাপাশি খাবারের এই স্বাদ নিতে চলে আসতে পারেন রোদেলা বিকেলে।

এবার ভেতরে চোখ রাখা যাক। প্লাইউডের মেঝে। চার পাশে কাঁচের দেয়াল। কোনায় কোনায় একটু সবুজ। আহমেদ নেওয়াজের নান্দনিক ইন্টেরিয়র ডিজাইন আপনাকে মুগ্ধ করবেই।

পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা, উন্নত খাবার এবং নির্ভেজালের জন্য এরই মধ্যে বিভিন্ন মহলের প্রশংসা কুড়িয়েছে রোদেলা বিকেল।

২৮ জানুয়ারীর রেঁস্তোরাটির এক বছর পূর্তি উপলক্ষে সোমবার থেকে বুধবার পর্যন্ত রয়েছে তিনদিনের বিশেষ আয়োজন। এ তিনদিন ভোজনরসিকরা ১০ শতাংশ ছাড় পাবে। এছাড়া রয়েছে ফ্রি স্পেশাল ওয়েলকাম ড্রিংকস।

রোদেলা বিকেলের ব্যবস্থাপক মাহবুবুল আলম বাংলানিউজকে বলেন,‘একবছরে রসনা বিলাসীদের যে সাড়া পেয়েছি তা আমাদের প্রত্যাশাকেও ছাড়িয়ে গেছে। ফ্রেশ এবং টেস্টি ফুড পরিবেশনের ক্ষেত্রে আমরা কোনো রকম কম্প্রোমাইজ করি না। আবার খাবারের স্বাদ বাড়ানোর জন্য শরীরের ক্ষতিকর টেস্টিং সল্টও ব্যবহার করি না।

ভোজন রসিকরা এখানে খাবার গ্রহণের পর তৃপ্তি নিয়েই ফিরবে। সেই সঙ্গে খাবারের মান নিয়ে যাতে কোনো প্রশ্ন না ওঠে, তাই রান্নাঘর রাখা আছে উন্মুক্ত। যে কেউ চাইলেই খাবার বানানোর প্রক্রিয়া দেখে নিতে পারবে।’

রোদেলে বিকেলে নিয়মিত খেতে আসা প্রকৌশলী মো. কবির বাংলানিউজকে বলেন,‘পাঁচ তারকা হোটেল রেডিসনের কাজ করছি আমরা। পছন্দের সব খাবারই এখানে পাওয়া যায়। তাই লাঞ্চ এখানেই সারছি। তাছাড়া এখানকার খাবারের মান খুবই ভালো।’

তার সঙ্গে থাকা জার্মান প্রকৌশলী মি. কোরাপ বলেন, ‘রেস্টুরেন্টটির খাবার খুব ভালো লেগেছে। খাবার অনেক টেস্ট এবং ফ্রেশ।’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাব্বির ইরফান বাংলানিউজকে বলেন,‘বন্ধুদের নিয়ে মাঝে মাঝে এখানে আড্ডা দিতে আসি। এখানকার নান্দনিক পরিবেশ খুবই ভালো লাগে। তাছাড়া এখানকার খাবারের টেস্টটাই আলাদা।’

দুপুর সাড়ে বারটা থেকে রাত সাড়ে ১০টা— সারাক্ষণই রেস্তোরাটি জমজমাট থাকে। এখানে দূর-দূরান্ত থেকে ভোজনরসিকরা খাবারের স্বাদ নিতে ছুটে আসেন। এখানে একসঙ্গে ১০০ জন খাবার খেতে পারেন। খাবারের মধ্যে অন্যতম দুপুরে তাজা লাক্ষ্যা মাছ, লাক্ষ্যা শুঁটকি, বোয়াল, পাবদা, দেশী বড় কই। শাকসহ হরেক রকম ভর্তা, শিমের বিচি, মাগুর মাছ, মইল্লা মাছের চচ্ছড়ি, শুটকি ভুনা, চিতলের কোপ্তা, চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহি মেজবানের মাংস, হাঁসের মাংস ভুনা, ঝাল কারি, কাঁচা মরিচ দিয়ে রান্না দেশী মুরগী, খিচুড়ি, দেশী চিকেন দম বিরিয়ানিসহ অনেক মজার আইটেম।

বিকাল এবং রাতে স্পেশাল চটপটি, দই ফুচকা, বেল পুরি, লাচ্ছা পরোটা নান, বার্লিক নান, প্লেন নান, চিকেন তান্দুরি, ফ্রন তান্দুরি, ফিশ তন্দুরি, চিকেন ভর্তা, হট চিকেন, হাড়িয়ালি চিকেন, ডাল মাখানি, আলুর দম, চিকেন মাশালা, মাটন ভুনা, মাটন পায়া, কাঁচা মরিচের চিকেন কারি, দেশী চিকেন দম বিরিয়ানি ও চিকেন কষার মতো মজাদার খাবার।

এছাড়া স্পেশাল চা-কফি, লাচ্ছি, ওবামা জুস ও কুলফি আইসক্রিম তো রয়েছেই।

রেঁস্তোরাটির খাবারে যেসব উপাদান ব্যবহার হয় তাও অবিশ্বাস্য। তবে সত্যি। স্প্যানিশ অলিভ, কানাডার কোনোলা, মালয়েশিয়ার সানফ্লাওয়ার অয়েল, দুবাইয়ের নিডো গুঁড়ো দুধ ও লিপটন টি ব্যাগ, অস্ট্রেলিয়ার চিনি, সুইজারল্যান্ডের গোল্ড কফি, ইন্ডিয়ান কাশ্মিরি মরিচ, ভেজিটেবল ডালডা, বাসমতি চাল ও মশলা, স্পেনের জাফরান, কাপ্তাই লেকের মাছ, বাঁশখালীর দেশি মুরগী, কুষ্টিয়ার খাসি, মিরসরাইয়ের দেশী গরু, হাতিয়ার হাঁসসহ দেশী বিদেশী সেরা উপাদানে তৈরি হয় এখানকার সুস্বাদু খাবার।

এমন সব বৈচিত্রময় খাবারের স্বাদ নিতে চাইলে আগেই বুক করে রাখতে পারেন 01616444466 অথবা 01842500333 নম্বরে ফোন করে।

Originally Published in Banglanews24

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may use these HTML tags and attributes: <a href="" title=""> <abbr title=""> <acronym title=""> <b> <blockquote cite=""> <cite> <code> <del datetime=""> <em> <i> <q cite=""> <s> <strike> <strong>

clear formSubmit